ওয়ান এবং ল্যান কি? এটি কিভাবে কাজ করে?

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক হলো এমন একটি ব্যবস্থা বা সিস্টেম যেখানে একাধিক কম্পিউটার একে অপরের সাথে সংযুক্ত হয়ে তথ্য, হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ইত্যাদি রিসোর্স শেয়ার করে থাকে। আজ আমরা আমাদের এই আর্টিকেল এ কম্পিউটার নেটওয়ার্কের দুইটি জনপ্রিয় নেটওয়ার্ক ওয়ান এবং ল্যান সম্পর্কে জানবো।

ওয়ান (WAN) কি?

ওয়ান (WAN): 

ওয়ান (WAN) এর পূর্ণরূপ হচ্ছে ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক (Wide Area Network)। যে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক অনেক বড় ভৌগোলিক বিস্তৃতি জুড়ে থাকে তাকে ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক বলে।

এই নেটওয়ার্কের সাহায্যে একটি দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরের সাথে কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়। সাধারণত বিশ্বের বিভিন্ন শহরে অবস্থিত LAN বা MAN বা অন্য কোনো  কম্পিউটার ডিভাইসও মূলত এই নেটওয়ার্কের সাথেই সংযুক্ত থাকে। 

এক্ষেত্রে একাধিক LAN বা MAN কে সংযুক্ত করার জন্য ফাইবার অপটিক ক্যাবল ব্যাকবোন হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং নেটওয়ার্ক ডিভাইস হিসেবে রাউটার, সুইচ, হাব, ব্রিজ, গেটওয়ে, রিপিটার ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়।

LAN বা MAN নেটওয়ার্কের তার মাধ্যম হিসেবে টুইস্টেড পেয়ার  ক্যাবল, কো এক্সিয়াল ক্যাবল বা ফাইবার অপটিক ক্যাবল এবং তারবিহীন মাধ্যম হিসেবে রেডিও ওয়েভ, মাইক্রোওয়েভ ব্যবহৃত হয়। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় WAN নেটওয়ার্ক এর উদাহরণ হলো ‘ইন্টারনেট’।

ওয়ান (WAN) বা ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্কের উদাহরণ:

  • একটি অঞ্চল বা দেশ জুড়ে একটি 4G নেটওয়ার্ক ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
  • একটি টেলিকম সংস্থা শত শত শহরের গ্রাহকদের বাড়িকে ফাইবার অপটিক ক্যাবলের সাথে সংযুক্ত করে ইন্টারনেট পরিষেবা সরবরাহ করতে ব্যবহৃত হয়।
  • একটি ব্যাংক একটি প্রাইভেট নেটওয়ার্ক সরবরাহ করে যা অনেকগুলো অফিসকে একত্রে সংযুক্ত করে। এই নেটওয়ার্কটি টেলিকম সংস্থার টেলিফোন লিজড লাইন ব্যবহার করে তৈরি করা হয়।

ল্যান (LAN) কী?

ল্যান (LAN): 

ল্যান LAN এর পূর্ণরূপ হচ্ছে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (Local Area Network)। সাধারণত ১০ কি.মি. বা তার কম পরিসরের জায়গার মধ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কম্পিউটার বা অন্যকোনো পেরিফেরাল ডিভাইস (যেমন- প্রিন্টার) সংযুক্ত করে যে নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয় তাকে LAN  বলে। এছাড়াও একটি বিল্ডিং বা পাশাপাশি অবস্থিত দুই তিনটি বিল্ডিং এর ডিভাইসগুলোর মধ্যে নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করলে তাকেও LAN বলা হয়।

এটি সাধারণত স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়, বড় কোন অফিসের কম্পিউটারগুলোর মধ্যে নেটওয়ার্কিং সিস্টেম এর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।

LAN এর টপোলজি সাধারণত স্টার, বাস, ট্রি ও রিং হয়ে থাকে।

LAN নেটওয়ার্কের ডিভাইসগুলোর সংযোগ তারযুক্ত বা তারবিহীন হতে পারে। যখন তারবিহীন সংযোগ দেওয়া হয়, তখন তাকে WLAN (Wireless Local Area Network) বলা হয়। এই ধরণের নেটওয়ার্কে তার মাধ্যম হিসেবে টুইস্টেড পেয়ার  ক্যাবল, কো এক্সিয়াল ক্যাবল বা  ফাইবার অপটিক ক্যাবল এবং তারবিহীন মাধ্যম হিসেবে রেডিও ওয়েভ ব্যবহৃত হয়।

ল্যান (LAN) এর বৈশিষ্ট্য:

  • এটি একটি প্রাইভেট নেটওয়ার্ক হওয়ায় বাইরের কোনো সংস্থা কখনই এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
  • ল্যান (LAN) নেটওয়ার্কিং সিস্টেম অন্যান্য WAN সিস্টেমের তুলনায় তুলনামূলক ভাবে বেশি গতিতে কাজ করে।
  • এই নেটওয়ার্কিং সিস্টেমে টোকেন রিং এবং ইথারনেটের মতো বিভিন্ন ধরণের মিডিয়া অ্যাক্সেস নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি রয়েছে।

ওয়ান (WAN) এবং ল্যান (LAN) কিভাবে কাজ করে?

উপরে আমরা ওয়ান এবং ল্যান সম্পর্কে ভালোভাবেই জেনেছি। এটি মূলত ইন্টারনেট নেটওয়ার্কিং সিস্টেম। 

  • ওয়ান একটি দেশের বিভিন্ন শহরের মধ্যে অপটিক ক্যাবল এর মাধ্যমে সংযোগ স্থাপন করে থাকে। এটি আন্তর্জাতিক ভাবে ও বিভিন্ন দেশকে ইন্টারনেট এর সাথে সংযুক্ত করে থাকে। 
  • অন্যদিকে ল্যান খুবই সল্প দূরত্বের জায়গায় একাধিক ডিভাইসকে ওয়্যার্ড সিস্টেমে অথবা ওয়্যারলেস সিস্টেমে সংযুক্ত করে থাকে। এক্ষেত্রে সংযোগ করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট লিমিটেশন থাকে। 
  • ওয়ান নেটওয়ার্ক সিস্টেম এর থেকে ল্যান নেটওয়ার্কিং সিস্টেম তুলনামূলক ভাবে বেশি শক্তিশালী ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক সার্ভিস প্রদান করে থাকে। 
  • মোটকথা ওয়ান এবং ল্যান উভয়ই ইন্টারনেট এর মাধ্যমে নেটওয়ার্ক সেবা প্রদান করে থাকে।  [ওয়ান এবং ল্যান কি? এটি কিভাবে কাজ করে?]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *