সোনালী ই ওয়ালেট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন আজকের পোস্টে। বর্তমান সময়ে আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনটি ব্যবহার করে সোনালী ব্যাংকের যেকোন ব্রাঞ্চের একাউন্ট অপারেট করতে পারবেন। ব্যাংকে না গিয়ে মোবাইলের মাধ্যমে ফান্ড ট্রান্সফার, মোবাইল রিচার্জ, ব্যাংক স্টেটমেন্ট নিতে পারবেন এবং চেক বইয়ের জন্য রিকোয়েস্ট করতে পারবেন।
তাছাড়াও আপনি সোনালী ই ওয়ালেট মাধ্যমে ব্যাংকের আরোও বেশ কিছু সুবিধা পাবেন। সেই সুবিধাগুলো কি কি এবং কিভাবে সোনালী ব্যাংকের সোনালী ই ওয়ালেট খুলতে হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো আজকের পোস্টে।
সোনালী ই ওয়ালেট খোলার নিয়ম
সোনালী ই ওয়ালেট খোলার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে একটি অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল করতে হবে। এখন এপ্লিকেশনটি ডাউনলোড করার জন্য আপনার মোবাইল ফোনে ডাটা সংযুক্ত চালু করুন। তারপর মোবাইলে থাকা ‘Google Play store’ অ্যাপ্লিকেশন প্রবেশ করুন এবং সার্চবারে ‘Sonali E-Wallet’ লিখে সার্চ করুন।
তারপর সার্চ রেজাল্টে আসা ‘Sonali E-Wallet’ অ্যাপসটি ইনস্টল করুন। এখন অ্যাপসটি সম্পূর্ণ ইনস্টল হওয়ার পরে অ্যাপসটিতে প্রবেশ করুন। তাহলে আপনার সামনে এমন একটি পেইজ ওপেন হবে।
এখন আপনার যদি আগে থেকে ‘Sonali E-Wallet’ অ্যাপে একাউন্ট তৈরি করা থাকে। তাহলে Mobile Number এবং Password দিয়ে একাউন্টে লগইন করুন। তার নতুন একাউন্ট তৈরি করার জন্য ‘Regular’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার সামনে একটি রেজিস্ট্রেশন ফর্ম চলে আসবে। এখানে আপনার জাতীর পরিচয় পত্রের তথ্য প্রদান করে একটি একাউন্ট তৈরি করতে হবে যেমন:
- Name
- Phone Number
- Bank Account
- NID/Passport
- Date of Birth
- Enter password (6 digit) এবং
- Re-entry Password (6 digit)
এখন উপরে উল্লেখিত অপশন গুলোতে আপনি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য অনুযায়ী পূরণ করুন। তারপর নিচের বক্সে টিক চিহ্ন দিয়ে ‘Submit’ বাটনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার মোবাইল নম্বরে একটি 6 ডিজিটের ভেরিফিকেশন কোড অথবা ওটিপি যাবে। সেটি বসিয়ে ‘Verify Otp’ অপশনে ক্লিক করুন।
আরোও পড়ুন: বিকাশ ব্যবহার করলে বিকাশের যেই আপডেট গুলো আপনার জানা উচিত।
তাহলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে এবং সেখানে একটি পেইজ দেখতে পাবেন এবং সেখানেই আপনার নাম, মোবাইল নম্বর ও একাউন্ট নম্বর লেখা থাকবে। এখন আপনি নিচে থেকে ‘Verify Otp’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার একাউন্টে খোলা সম্পূর্ণ হবে।
এখন আপনাকে ‘Sonali E-Wallet’ একাউন্টটিকে একটিভ করতে হবে। এখানে আপনি দুই ভাবে একাউন্ট অ্যাক্টিভ করতে পারবেন। যেমন:
- আপনি যে ব্রাঞ্চে থেকে একাউন্ট তৈরি করেছেন সেই ব্রাঞ্চে গিয়ে একাউন্টটি এক্টিভ করতে পারবেন এবং
- সোনালী ব্যাংকের যে হেল্পলাইন রয়েছে সেখানে কল করে সরাসরি কথা বলে একাউন্ট এক্টিভ করে নিতে পারবেন
এখানে যার নামে একাউন্ট রয়েছে সেই ব্যক্তিকে হেল্পলাইনে ফোন করে তাদের সাথে কথা বলাতে হবে। তার কারণ হলো: তারা কিছু information জানতে চাইবে এবং ইনফরমেশন গুলো তাদেরকে সঠিকভাবে প্রদান করতে হবে।
তাহলে সোনালী ব্যাংক হেল্পলাইন থেকে আপনার অনলাইন ইন্টারনেট ব্যাংকিংটি এক্টিভ করে দিবে। অর্থাৎ ‘সোনালী ই-ওয়ালেট’ ভিতরে যে ইন্টারনেট ব্যাংকিং একাউন্ট রয়েছে সেটি অ্যাক্টিভ করে দিবে।
তাহলে একাউন্টটি একটিভ হয়ে যাওয়ার পরে আপনি আবারো ই ওয়ালেট একাউন্টে প্রবেশ করুন। তারপর আপনার ‘সোনালি ই ওয়ালেট’ একাউন্টে Mobile Number এবং Password দিয়ে একাউন্টে লগইন করুন। তাহলে আপনাকে ‘সোনালী ই-ওয়ালেট’ একাউন্টে মেইন ইন্টারফেসে নিয়ে যাবে এবং সেখানে এমন একটি পেইজ দেখতে পাবেন।
এখন উপরে বামপাশে ‘Bank Balance’ অপশনে ক্লিক করে আপনার ব্যাংক একাউন্ট ব্যালেন্স দেখতে পারবেন এবং ডানপাশে ‘Wallet Balance’ অপশনে ক্লিক করে আপনার সোনালী ই ওয়ালেট এমাউন্ট দেখতে পারবেন। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক কোন অপশনের মাধ্যমে আপনি কি কি কাজ করতে পারবেন।
E-BANK
E-BANK অপশনে ক্লিক করলে তিনটি অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- Add Money
- Bank Deposit এবং
- Statement
এখন আপনি ‘Add money’ অপশনে ক্লিক করে আপনার ব্যাংক একাউন্ট থেকে সোনালী ই ওয়ালেট ‘Add money’ করতে পারবেন। তাছাড়াও Bank Deposit অপশনে ক্লিক করে সোনালী ই ওয়ালেট থেকে আপনার ব্যাংকে টাকা ডিপোজিট করতে পারবেন এবং Statement অপশনে ক্লিক করে আপনার ব্যাংক একাউন্টটির স্টেটমেন্ট ও দেখতে পারবেন।
Bill Pay
তাছাড়াও Bill Pay অপশনে ক্লিক করে আপনি BTCL এবং DPDC বিল পরিশোধ করতে পারবেন।
Recharge
Recharge অপশনে ক্লিক করে আপনার সোনালী ব্যাংকের একাউন্ট থেকে যেকোনো মোবাইল নম্বরে রিচার্জ করতে পারবেন। তাঁর জন্য আপনাকে সোনালী ই ওয়ালেট ভিতরে টাকা এড করতে হবে। তারপর ‘ই ওয়ালেট’ থেকে আপনি যেকোনো মোবাইল নম্বরে টাকা রিচার্জ করতে পারবেন।
Send Money
তাছাড়াও Send Money অপশনে ক্লিক করে আপনি সরাসরি ‘Sonali Bank’ To ‘Sonali Bank’ একাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন। তাছাড়াও ‘ই ওয়ালেট’ থেকে সোনালী ব্যাংকের একাউন্টে টাকা পাঠাতে পারবেন এবং ব্যাংক টু সোনালী ‘ই-ওয়ালেট’ টাকা পাঠাতে পারেন।
DPS
DPS অপশনে ক্লিক করে আপনার যদি কোন সোনালী ব্যাংকে ডিপিএস থাকে। তাহলে সেই টিপিএসের পেমেন্ট ও করতে পারবেন।
BEFTN
তাছাড়াও BEFTN অপশনে মাধ্যমে আপনি সোনালী ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন।
Card
তারপর Card অপশনে ক্লিক করে আপনার কার্ডের বিলটি পরিশোধ করতে পারবেন।
Remittance
Remittance অপশনে ক্লিক করলে দুটি অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- Remit Query এবং
- Form C
এখন আপনি ‘Remit Query’ অপশনে ক্লিক করে ‘Remittance Query’ করতে পারবেন এবং Form C অপশনে ক্লিক করে Form C টি পূরণ করতে পারবেন।
NPSB
তাছাড়াও NPSB অর্থ:(ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইস বাংলাদেশ) অপশনে ক্লিক করে মুহূর্তের মধ্যেই যে কোন ব্যাংকে টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন।
SONALI E-SHEBA
SONALI E-SHEBA মাধ্যমে আপনি ঘরে বসে একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন। আপনাদের ভিতরে যারা প্রবাসী রয়েছেন অথবা স্টুডেন্ট রয়েছেন। তারা চাইলেও একাউন্টটি খুলতে পারবেন।
Service
তারপর Service অপশনে ক্লিক করলে তিনটি অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- Debit Card Service
- Cheque Book Request এবং
- Tax Return
এখন Service অপশনে মাধ্যমে আপনার ‘Debit Card Service’ জন্য আবেদন করতে পারবেন। তাছাড়াও আপনার যদি চেক বইয়ের পৃষ্ঠা শেষ হয়ে যায়। তাহলে ‘Cheque Book Request’ অপশনের মাধ্যমে নতুন চেক বইয়ের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
মুলত সোনালী ই ওয়ালেট মাধ্যমে আপনি এই কাজগুলো করতে পারবেন। তাছাড়াও সোনালী ই ওয়ালেট সার্ভিস এক্টিভ করে আপনি ঘরে বসে সকল কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে সোনালী ই ওয়ালেট একাউন্ট তৈরি করে সোনালী ব্যাংকের যাবতীয় কাজ ঘরে বসে সম্পন্ন করতে পারবেন।
আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আপনি সোনালী ই ওয়ালেট একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং সোনালী ই ওয়ালেট ব্যবহারের সুবিধাগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট পেতে চোখ রাখুন কথাবার্তা২৪ ওয়েবসাইটে!