ই-নামজারি আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন আজকের পোস্ট। আপনারা অনেকেই জানেন না কিভাবে সঠিক নিয়মে অনলাইনের মাধ্যমে ই-নামজারি আবেদন করতে হয়। আজকের পোস্টে আমরা সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
ই-নামজারি আবেদন
ই-নামজারি আবেদন করার জন্য সর্বপ্রথম আপনার মোবাইলে কিংবা কম্পিউটারে ডাটা সংযোগ চালু করুন। তারপর মোবাইল কিংবা কম্পিউটারে থাকা যেকোনো একটি ব্রাউজার ওপেন করুন এবং সার্চবার https://mutation.land.gov.bd লিখে সার্চ করুন।
তারপর সার্চ রেজাল্টে আসা ই-নামজারি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। তাহলে আপনার সামনে একটি ফরম চলে আসবে এবং সেখানে অনেকগুলো অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- নির্দেশিকা
- টিওটোরিয়াল
- নামজারি আবেদন
- খসড়া আবেদন
- আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা
উপরে উল্লেখিত অপশন গুলো থেকে ‘নামজারি আবেদন’ অপশনটিতে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে। সেখানে নতুন আবেদন করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে ‘কোড ফি নম্বর’ তৈরি করতে হবে।
এজন্য ‘কোড ফি’ অপশনটিত ক্লিক করুন। তাহলে অনেকগুলো অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- বিভাগ
- জেলা
- উপজেলা
- নাম
- ঠিকানা
- মোবাইল নম্বর
- জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর
- জন্ম তারিখ
এখন উপরে উল্লেখিত অপশন গুলোতে আপনার সঠিক তথ্য প্রদান করুন। তারপর ‘পরবর্তী’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার সামনে দুটি অপশন চলে আসবে। যেমন:
- মোবাইল ওয়ালেট এবং
- ইন্টারনেট ব্যাংকিং
এখন আপনি ‘ইন্টারনেট ব্যাংকিং’ অপশনে ক্লিক করে তারপর নিচ থেকে ‘অগ্রসর হউন’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার সামনে অনেকগুলো পেমেন্ট গেটওয়ে চলে আসবে। যেমন:
- বিকাশ
- রকেট
- নগদ
- উপায়
- Ekpay ইত্যাদি
এখানে আপনি যেকোন পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি বিকাশ সিলেক্ট করলেন। এখন ‘পরবর্তী’ অপশনে আপনার বিকাশ একাউন্ট নম্বর বসিয়ে confirm অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার মোবাইল নম্বর একটি ভেরিফিকেশন কোড অথবা OTP যাবে সেটি বসিয়ে confirm অপশনে ক্লিক করুন।
আরোও পড়ুন: অনলাইনে ই টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড
তারপর আপনার বিকাশ একাউন্টে পিন নম্বর বসে আবারো confirm অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার কোড ফি তৈরি করা সম্পূর্ণ হবে। এখন আপনি কোট ফি নম্বরটি সংরক্ষণ করে রাখুন পরবর্তী আবেদন সম্পূর্ণ হওয়ার আগ পর্যন্ত।
এখন আপনি ‘আবেদন ফরম’ অপশনে ক্লিক করে আবারও আবেদনের পৃষ্ঠায় চলে আসুন। এখানে আপনি বেশ কিছু অপশন দেখতে পাবেন। ১ নং অপশনে ‘জমির মালিকানা সুত্র’ অপশন দেখতে পাবেন এবং তার নিচে অনেকগুলো অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- ক্রয়
- ওয়ারিশ
- হেবা
- ডিগ্ৰি
- নিলাম
- বন্দোবস্ত
- অধিগ্ৰহন
- অন্যান্য
এখন উপরে উল্লেখিত অপশন গুলো থেকে আপনি ‘জমির মালিকানা সুত্র’ অপশনটি সিলেক্ট করুন। তারপর ২ নং অপশনে ‘ক্রেতা বাদি গ্ৰহীতার তথ্য’ অপশনে নিচে দুটি অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- ব্যাক্তি মালিকাধীন জমির জন্য আবেদন
- প্রতিষ্ঠানিক মালিকাধীন জমির জন্য আবেদন
এখন আপনি ‘ক্রেতা বাদি গ্ৰহীতার তথ্য’ অপশনটি সিলেক্ট করুন। তাহলে নিচে ‘১৮ বছরের উর্ধ্বে সকল গ্রহীতার জাতীয় পরিচয় পত্র আছে কিনা’ লেখা চলে আসবে এবং তার নিচে দুটি অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- হ্যাঁ এবং
- না
এখানে আপনার বয়স যদি ১৮ বছরের ঊর্ধে হয় তাহলে হ্যাঁ সিলেক্ট করুন। আর ১৮ বছরের নিচে হলে না সিলেক্ট করুন এবং তার নিচে গ্ৰহীতা এবং প্রতিনিধি অপশন দেখতে পাবেন। সেখান থেকে আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী সিলেক্ট করুন। তারপর নিচে অনেকগুলো অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর
- জন্ম তারিখ
- নাম (বাংলায় লিখতে হবে)
- পিতার নাম (বাংলায় লিখতে হবে)
- মাতার নাম (বাংলায় লিখতে হবে)
- লিঙ্গ
উপরে উল্লেখিত অপশন গুলোতে আপনি আপনার সঠিক তথ্য প্রদান করুন। এবারে নিচে আপনার একটি সচল মোবাইল নম্বর বসিয়ে দিন। তারপর নিচে ৩ নং অপশনে ‘মৌজা নির্বাচন করুন’ লেখা দেখতে পাবেন এবং তার নিচে অনেকগুলো অপশন পাবেন। যেমন:
- বিভাগ
- জেলা
- উপজেলা এবং
- মৌজা
এখন আপনি উপরের তথ্যগুলো সঠিকভাবে বসিয়ে দিন। তারপর একটু স্ক্রোল করে নিচে নামলে আপনি আবেদন সংক্রান্ত ঘোষণা অপশনে চারটি MCQ দেখতে পাবেন। এখন সেখান থেকে আপনার জন্য প্রযোজ্য অপশন গুলো বেছে নিন।
তারপর নিচে ‘আবেদনে তফসিলভুক্ত জমির সর্বশেষ জরিপের তথ্য’ সিলেক্ট করুন। এখন পরবর্তী অপশনে ‘আবেদনে বর্ণিত তফসিল’ অপশন দেখতে পাবেন। সেখানে দুটি অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- জমি
- এপার্টমেন্ট/ফ্লোর স্পেস
এখানে আপনি ‘আবেদনে বর্ণিত তফসিল’ অপশনটি সিলেক্ট করুন এবং তার নিচে গ্রহীতাদের এই মৌজায় বর্তমানে কোন খতিয়ান আছে কিনা অপশন দেখতে পাবেন এবং তার নিচে দুটি অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- হ্যাঁ এবং
- না
এখন আপনি যে মৌজাতে আবেদন করতে চাচ্ছেন সেই মৌজাটিতে অন্য কোন খতিয়ান আছে কিনা সিলেক্ট করুন। তারপর ‘পরবর্তী’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে জাতীয় পরিচয় পত্রের সাথে হুবুহু মিল রেখে তথ্য পূরণ করা হয়েছে অপশনে হ্যাঁ সিলেক্ট করুন।
এখন আপনার দেয়া মোবাইল নাম্বারে ৬ ডিজিটের একটি ভেরিফিকেশন কোড অথবা ওটিপি যাবে সেটি বসিয়ে ‘যাচাই করুন’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার দেওয়া সকল তথ্য দেখতে পাবেন। এখন তথ্যগুলো সঠিক থাকলে নিচে থেকে পরবর্তী অপশনে ক্লিক করুন।
এখন পরবর্তী অপশনে ‘আবেদিত জমির তাফসিল’ অপশন দেখতে পাবেন এবং তার নিচে অনেকগুলো অপশন দেখতে পাবেন যেমন:
- খতিয়ানের ধরন
- খতিয়ান নং
- দাগ নং
- জমির মাপক ও জমির পরিমাণ
- দলিল নং
- দলিল তারিখ
- দলিলে ভূমির মূল্য
- জেলা
- সাব রেজিস্টার অফিসের নাম
এখন আপনি উপরে অপশন গুলো সঠিকভাবে পূরণ করুন এবং স্ক্রোল করে নিচে নামলে ‘বাদি গ্ৰহীতার তথ্য’ অপশন দেখতে পাবেন। এখন প্রথমে আপনাকে আপনার ছবি আপলোড করতে হবে। এখানে ছবি যুক্ত করার জন্য ‘ছবি সংযুক্ত করুন’ অপশনে ক্লিক করে আপনার ছবি আপলোড করুন।
এখন নিচে অনেকগুলো অপশন দেখতে পাবেন। সেখানে অনেকগুলো অপশন পূরণ করা থাকবে এবং আপনাকে কিছু অপশন পূরণ করতে হবে। যেমন:
- জেলা
- উপজেলা
- ঠিকানা
এখন আপনি আপনার ঠিকানা অনুযায়ী উপরের অপশন গুলো সঠিকভাবে পূরণ করুন। এখানে উপরে উল্লেখিত সকল তথ্য সঠিকভাবে থাকলে নিচে থেকে ‘পরবর্তী’ অপশনে ক্লিক করুন। তারপর এখানে আপনাকে দাতার তথ্য প্রদান করতে হবে। যেমন:
- মালিক
- হোল্ডিং নং (LD Tax)
- মোবাইল নং
- জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর
- জন্ম তারিখ
- জমির পরিমাণ
- জেলা
- উপজেলা
- পিতা/স্বামী/গ্রাম/মহল্লা, বাসা ও সড়ক নং
এখন উপরে অপশন গুলো সঠিকভাবে পূরণ করা হয়ে গেলে সংযোজন অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে ডকুমেন্ট সংযোজন পেইজে নিয়ে আসবে সেখানে আগে থেকে স্ক্যান করা মূল দলিলের কপি, পর্চা বা খতিয়ান কপি সংযুক্ত করুন। এরপর যদি আপনার অন্যান্য কোন ডকুমেন্ট সংযুক্ত করার প্রয়োজন হয় তহলে অন্যান্যতে ক্লিক করে ডকুমেন্ট গুলো সংযুক্ত করে দিন।
তারপর আরেকটু নিয়ে স্ক্রোল করে টার্মস এন্ড কন্ডিশন (আবেদনের প্রদত্ত যাবতীয় তথ্য) বক্সে টিক মার্ক দিয়ে আবেদন দাখিল করুন অপশনে ক্লিক করে ‘হ্যাঁ’ করে দিন।
এখন পেমেন্ট করার জন্য দুটি পেমেন্ট গেটওয়ে অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- মোবাইল ওয়ালেট এবং
- ইন্টারনেট ব্যাংকিং
এখানে আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী পেমেন্ট গেটওয়ে সিলেক্ট করুন। উদাহরণ স্বরূপ, আপনি ‘ইন্টারনেট ব্যাংকিং’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে পেমেন্ট করার জন্য অনেকগুলো পেমেন্ট গেটওয়ে চলে আসবে। যেমন:
- বিকাশ
- রকেট
- নগদ
- উপায়
- Ekpay
এখানে আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী পেমেন্ট গেটওয়ে সিলেক্ট করুন। উদাহরণ স্বরূপ, আপনি বিকাশ সিলেক্ট করলেন। এখন আপনার বিকাশ একাউন্টের নম্বরটি বসিয়ে confirm অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার মোবাইল নম্বর একটি ভেরিফিকেশন কোড অথবা ওটিপি যাবে সেটি বসিয়ে confirm অপশনে ক্লিক করুন।
তারপর আপনার বিকাশ একাউন্টের পিন নম্বর বসিয়ে confirm অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার আবেদন সাকসেসফুল হয়ে যাবে। এখন এখান থেকে পেমেন্ট রিসিট আবেদন প্রিন্ট করে সেখানে আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করে আপনার নিকটস্থ ভূমি অফিসে জমা দিন।
[…] আরোও পড়ুন: ই-নামজারি আবেদন করার নিয়ম […]