নতুন ভোটার আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন আজকের পোস্টে। আপনাদের ভিতরে অনেকেই আছেন যারা এখনো ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করেন নি। অথবা কিভাবে নতুন ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে হয় সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানেন না।
এখন আপনি চাইলেই আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনটি ব্যবহার করে নতুন ভোটার আবেদন করতে পারবেন। তার জন্য আপনার বয়স হতে হবে নূন্যতম ১৮ বছর। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক কিভাবে হাতে থাকা স্মার্টফোনটি ব্যবহার করে নতুন ভোটার আবেদন করতে হয়।
নতুন ভোটার আবেদন করবেন যেভাবে
নতুন ভোটার আবেদন করার জন্য সর্বপ্রথম আপনার মোবাইল ফোনে ডাটা সংযোগ চালু করুন। তারপর মোবাইলে থাকা যেকোনো একটি ব্রাউজার ওপেন করুন এবং সার্চবারে Services Nidw gov bd লিখে সার্চ করুন। তারপর search result আসা প্রথম ওয়েবসাইট অর্থাৎ, ‘Nid Card’ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। তাহলে আপনার সামনে এমন একটি পেইজ ওপেন হবে।
এখন নতুন ভোটার আবেদন করার জন্য ‘আবেদন করুন’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে। সেখানে একটি ফর্ম দেখতে পারেন। এখন প্রথমেই আপনার পুরো নাম (ইংরেজিতে) লিখুন। তারপর আপনার জন্ম তারিখ এবং নিচের প্রদর্শিত কোডটি সঠিকভাবে পূরণ করে ‘বহাল’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে।
এখন পরবর্তী অপশনে আপনার একটি সচল মোবাইল নম্বর বসিয়ে দিন এবং নিচে থেকে ‘বার্তা পাঠান’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার মোবাইল নম্বরে ৬ ডিজিটের একটি ভেরিফিকেশন কোড অথবা ওটিপি যাবে। সেটি বসিয়ে ‘বহাল’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে।
নতুন ভোটার অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন
পরবর্তী ধাপে আসার পর সেখানে ‘অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন’ নামে একটি অপশন দেখতে পাবেন এবং তার নিচে তিনটি অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- ইউজার নেম
- পাসওয়ার্ড এবং
- পূনরায় পাসওয়ার্ড লিখুন
এখন উপরে উল্লেখিত অপশনগুলো সঠিকভাবে পূরণ করে ‘বহাল’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে পরবর্তী অপশনে ‘বিস্তারিত প্রোফাইল’ নামে একটি অপশন পেয়ে যাবেন সেখানে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার সমস্ত তথ্য ফুল ফিল করার জন্য একটি ফরম চলে আসবে।
এখানে অবশ্যই আপনার তথ্যগুলো আপনার সার্টিফিকেট অনুযায়ী বসাবেন এবং আপনার পিতা মাতার তথ্য আপনার পিতা মাতার এনআইডি কার্ড অনুযায়ী বসাবেন এবং ঠিকানাটাও এনআইডি কার্ড অনুযায়ী বসাবেন।
এখন তথ্যগুলো ফিলাপ করার জন্য উপর থেকে ‘এডিট’ অপশনে ক্লিক করে অপশনগুলো সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করুন। যেমন: নাম (বাংলায়), নাম (ইংরেজিতে), লিঙ্গ, রক্তের গ্রুপ, জন্ম তারিখ, পিতা-মাতা তথ্য ইত্যাদি। এখন আপনার তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ করা হয়ে গেলে ‘পরবর্তী’ অপশনে ক্লিক করুন।
আরোও পড়ুন: জন্ম নিবন্ধন দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খুলুন
তাহলে আপনাকে পরবর্তী অপশনে নিয়ে যাবে। সেখানে আপনার ‘শিক্ষাগত যোগ্যতা’ দিতে হবে। তাহলে এখানে আপনার ‘শিক্ষাগত যোগ্যতা (বাংলায়)’সিলেক্ট করুন। যাদের শিক্ষগতা যোগ্যতা নেই তারা নিরক্ষর অথবা অন্যান্য সিলেট করুন।
তারপর আপনার পেশা। অসমর্থতা অর্থাৎ আপনি যদি প্রতিবন্ধী বা দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা থেকে থাকেন তাহলে সেটি সিলেট করুন। আর যদি কোন প্রকার অসমর্থতা না থাকে তাহলে এটি স্কিপ করে নিচে চলে আসুন। এরপর পর্যায়ক্রমে সনাক্তকরণ চিহ্ন, টিন নম্বর, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট নম্বর, ধর্ম, টেলিফোন নম্বর, মোবাইল নম্বর ইত্যাদি তথ্য পূরণ করে আবার ওপর থেকে ‘পরবর্তী’ বাটনে ক্লিক করুন।
তবে মনে রাখবেন উল্লেখিত তথ্য গুলোর মধ্যে যেগুলোতে লাল রঙের স্টার চিহ্ন (*) দেওয়া আছে সেগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে এবং বাকি অপশন গুলো চাইলে স্কিপ করতে পারেন।
পরবর্তী বাটনে ক্লিক করলে আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে। যেখানে আপনার বর্তমান ঠিকানা দিতে হবে। বর্তমান ঠিকানার মধ্যে যে তথ্যগুলো দিতে হবে সেগুলো হল:
- অবস্থানরত দেশের নাম
- ভোটার ঠিকানা
- বর্তমান ঠিকানা। যেমন: (বিভাগ, জেলা, উপজেলা, আর.এম.ও, সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা, ইউনিয়ন, মৌজা/মহল্লা, ওয়ার্ড নম্বর, গ্রাম, বাসা/হোল্ডিং, পোস্ট অফিস, পোস্ট কোড ইত্যাদি।
- স্থায়ী ঠিকানা। যেমন: বিভাগ, জেলা, উপজেলা,আর.এম.ও,সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা, ইউনিয়ন,মৌজা/মহল্লা, ওয়ার্ড নম্বর, গ্রাম/রাস্তা, বাসা/হোল্ডিং (বাংলা), পোস্ট অফিস (বাংলা), পোস্ট কোড,ভোটার এরিয়া ইত্যাদি।
এখন উপরে উল্লেখিত অপশনগুলো সঠিক ভাবে পূরণ করা হয়ে গেলে ‘পরবর্তী’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী অপশনে নিয়ে যাবে সেখানে ‘কাগজপত্রের প্রয়োজন নেই’ লেখাটি দেখতে পাবেন। অর্থাৎ এই আবেদনটি করার জন্য কোন কাগজপত্র প্রয়োজন হবে না। এখন আপনি ‘পরবর্তী’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে পরবর্তী অপশনে ‘নিশ্চিত করুন’ লেখা দেখতে পাবেন। অর্থাৎ, আপনার সকল তথ্যগুলো কমপ্লিট হয়ে গেছে।
এখন আপনাকে তথ্যগুলো সাবমিট করতে হবে। তথ্যগুলো সাবমিট করার জন্য ‘সাবমিট’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার আবেদন পত্রটি সাবমিট হয়ে যাবে। এখন সাবমিট অপশনে ক্লিক করলে পরবর্তী অপশনে ‘আপনার একটি এপ্লিকেশন পেন্ডিং রয়েছে’ লেখা দেখতে পাবেন এবং সেখানে আপনার সকল তথ্য দেখতে পাবেন। এখন আপনি ‘ডাউনলোড’ নামে একটা অপশন দেখতে পাবেন সেখানে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার সামনে আপনার আবেদন পত্রের ফরমটি চলে আসবে।
এখন আপনাকে এই ফর্মটি কম্পিউটার দোকান থেকে প্রিন্ট করে নিতে হবে এবং আবেদনপত্রের সাথে আপনাকে কিছু কাগজপত্র যুক্ত করতে হবে। যেমন:
- স্কুল সার্টিফিকেট/প্রবেশপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি
- পিতা-মাতাল এনআইডি কার্ডের ফটোকপি
- নাগরিক সনদপত্র/প্রত্যয়ন পত্র
- জন্ম সনদের সত্যায়িত ফটোকপি
তারপর এই ফর্মে থাকা ৩৪ নম্বর কলামে আপনার চেয়ারম্যান অথবা মেম্বারের ‘ভোটার আইডি কার্ডের নম্বরটি’ বসিয়ে দিন এবং চেয়ারম্যান অথবা মেম্বারের স্বাক্ষর দিতে হবে। আর শহরে থাকলে কমিশনারের এনআইডি নম্বর ও স্বাক্ষর বসিয়ে দিতে হবে। তারপর এই ফর্ম সাথে উপরে উল্লেখিত কাগজপত্র সংযুক্ত করে আপনার নিকটস্থ উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে দাখিল করবেন। তাহলে নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা আপনাকে একটি নির্দিষ্ট ‘Date’ দিবে।
সেই তারিখে গিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং চোখের আইরিস দিয়ে আসবেন। প্রবাসীদের ক্ষেত্রে দেশে ফিরে আসার কয়েক দিন আগেই আবেদন করলে সবচেয়ে ভালো হয় এতে করে দেশে এসে ছুটির সময়ের মধ্যে কাগজপত্রগুলো জমা দিয়ে ভোটার হয়ে যেতে পারবেন।
আপনি সফলভাবে সবগুলো ধাপ সম্পন্ন করার পর কিছুদিনের মধ্যে আপনি নতুন ভোটার স্মার্টকার্ডটি হাতে পেয়ে যাবেন। এভাবে খুব সহজে উপরোক্ত নিয়ম অনুসরণ করে নতুন ভোটার আবেদ করতে পারবেন।
আশা করি, আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অনলাইনে নতুন ভোটার আবেদন করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ কনটেন্ট পেতে চোখ রাখুন KothaBarta24 ওয়েবসাইট। ধন্যবাদ!
[…] আরোও পড়ুন: ১০ মিনিটে নতুন ভোটার আবেদন করুন। […]