নিজস্ব প্রতিবেদক ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১১:৩৩ পিএম প্রিন্ট সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টারঃ
রাজধানী ডেমরা যাত্রাবাড়ি মাতুয়াইলে মহামারি করোনা সংক্রমণের এই দুঃসময়ে অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের চাপ দিয়ে টিউশনসহ অন্যান্য ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে মাতুয়াইলে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি নির্ধারিত সময়ে ফি দিতে ব্যর্থ হলে আদায় করা হচ্ছে জরিমানাও।
এছাড়া টিউশন ফি দিতে না পারায় অনলাইন ক্লাশ থেকেও শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এমনকি, ওই প্রতিষ্ঠানের লোকজন শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়েও টিউশনসহ অন্যান্য ফি আদায়ে চাপ প্রয়োগ করছেন।
এতে অনেক অভিভাবক সামর্থ্য না থাকলেও অনেকটা বাধ্য হয়ে করোনার মধ্যেই পূর্ণ বেতন পরিশোধ করছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বোর্ডের নির্দেশনা উপেক্ষা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর এমন কর্মকাণ্ডে অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
তাদের অভিযোগ,পাড়াডগাইর আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ (সাবেক সালাউদ্দীন স্কুল এন্ড কলেজ), মিজমিজি পশ্চিম পাড়া হাই স্কুল(নারায়নগঞ্জ) ,হাজী মোয়াজ্জেম আলী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়,বর্নমালা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ,অগ্রদুত বিদ্যানিকেতন হাই স্কুল,বাওয়ানী উচ্চ বিদ্যালয়, সামসুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজ,গোলাম মোস্তফা স্কুল এন্ড কলেজের কর্তৃপক্ষ মহামারীর এই দুঃসময়ে বিন্দুমাত্র ছাড় দিচ্ছে না। টিউশনসহ নানা ফি আদায় করে চলেছেন।
একাধিক ভুক্তভোগী অভিভাবক বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মার্চ থেকে টিউশন ফি পরিশোধ করা হয়নি। কিন্তু চলতি সেপ্টেম্বর মাসের শুরু থেকেই ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে দফায় দফায় বকেয়া টিউশনসহ অন্যান্য ফি পরিশোধে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। বার বার তাগিদ দিয়ে মোবাইলে মেসেজ পাঠানো হচ্ছে। এমনকি তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়েও আদায়কারীরা বকেয়া রশিদ ধরিয়ে দিচ্ছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এসব ফি পরিশোধ করা না হলে বিলম্ব ফি ছাড়া এসব টাকা জমা নেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। পর্যায়ক্রমে কিস্তি করে টাকা দিতে চাইলেও কর্তৃপক্ষ মানতে নারাজ। এছাড়া স্কুল বন্ধ থাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবহনের বাস সার্ভিস বন্ধ রয়েছে। কিন্তু টিউশন ফির সঙ্গে বাস ভাড়াও নেওয়া হচ্ছে। যা খুবই দুঃখজনক। প্রতিষ্ঠানের সব বকেয়া পরিশোদ করেছেন বলে জানান এসব অভিভাবকরা।
অথচ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডের পক্ষ থেকে করোনাকালীন সময়ে অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করতে বলা হয়েছে। চাপ প্রয়োগ করে কোনো ফি আদায় না করতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব নির্দেশনা উপেক্ষা করেই টিউশনসহ বিভিন্ন ফি আদায় করা হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
মাতুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন এর সাথে কথা বলে জানা যায় , করোনায় টিউশনসহ অন্যান্য ফি আদায় করার জন্য চাপ প্রয়োগের অভিযোগ সত্য নয়। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের বেতনসহ অন্যান্য খাত থেকে যে টাকা আদায় করা হয়, তা থেকেই শিক্ষকদের বেতন-ভাতা এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যয় মেটানো হয়। তাই দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের বেতন নিতে পারিনি। এজন্য শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বকেয়া পড়ে গেছে। ফলে বকেয়া টাকা পরিশোধ করার জন্য অভিভাবকদের বলা হয়েছে।এ বিষয়ে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের যুগ্ন সচিব মিজানুর রহমান মন্টু এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন করোনাকালীন সময়ে অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করতে বলা হয়েছে। চাপ প্রয়োগ করে কোনো ফি আদায় না করতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।তার পরেও অনেকে অভিযোগ করছেন বিভিন্ন প্রতিষ্টানের বিরুদ্ধে,আমরা এগুলো খতিয়ে দেখব।