নিজস্ব প্রতিবেদক ৩১ জুলাই ২০২০ , ১১:০৪ পিএম প্রিন্ট সংস্করণ
করোনা ভাইরাসের করাল গ্রাসে বিপর্যস্ত বিশ্ববাসী । প্রায় প্রত্যেকটি দেশেই এই ভাইরাসের তীব্র প্রভাব পড়েছে। যার ফলে ক্রমান্বয়ে দারিদ্রতার হার প্রবল আকারে বেড়েছে। দিশেহারা হয়ে কাজের সন্ধান করছে দারিদ্র্য সীমার কাছাকাছি বা নিচে থাকা সকলেই। পরিবারের ছোট্ট শিশুরাও পরিবারকে আর্থিক ভাবে সহযোগিতা করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের কাজের সঙ্গে জড়িত হচ্ছে। কেউ ইট ভাঙ্গছে, কেউ কৃষি কাজ করছে আবার কেউ বা গেরেজে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছে। পরিবহণ ক্ষেত্রের শিশু শ্রমের কমতি নেই।
বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক দুরবস্থা হচ্ছে শিশু শ্রমের প্রথম ও প্রধান কারণ। লেখাপড়ার খরচ দিতে না পেরে এবং সংসারের অসচ্ছলতার গ্লানি একজন মা-বাবাকে বাধ্য করে তার সন্তানকে শ্রমে নিযুক্ত করতে।
অভাব অনটনের কারণেই মূলত শিশু শ্রম অনেক বেড়ে গেছে। এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে অর্থনীতিতে চলমান বিপর্যয়ে বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার ১৫ বছর আগের অবস্থানে ফিরে যেতে পারে।যার ফলাফল হয়তো অতি শীঘ্রই আমরা পেয়ে যাব।
বাংলাদেশে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা ৫-১৪ বছর বয়সী মোট শিশু জনসংখ্যার ১৯%, ছেলেশিশুদের ক্ষেত্রে এই হার ২১.৯% এবং মেয়ে শিশুদের ক্ষেত্রে তা ১৬.১%। অর্থনীতির খাত অনুযায়ী শিশুশ্রমিকদের বণ্টনের চিত্র হচ্ছে: কৃষি ৩৫%, শিল্প ৮%, পরিবহন ২%, অন্যান্য সেবা ১০% এবং গার্হস্থ্যকর্ম ১৫%। কিন্তু পরিবহন খাতে শিশুশ্রমের ক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য ব্যাপক। অর্থাৎ যেখানে ০.১% মেয়ে শ্রমিক সেখানে ছেলে শ্রমিক হলো ৩%।
শিশুশ্রম নিয়োগের প্রায় ৯৫ শতাংশ ঘটে অনানুষ্ঠানিক খাতে। এদের জন্য সাপ্তাহিক গড় কর্মঘণ্টা আনুমানিক ৪৫ এবং মাসিক বেতন ৫০০ টাকার নিচে। মেয়ে শিশুশ্রমিকের মাসিক বেতন ছেলে শিশুশ্রমিকের তুলনায় গড়ে প্রায় ১০০ টাকা কম। বাংলাদেশের আনুমানিক ২০% পরিবারে ৫-১৪ বছরের কর্মজীবী শিশু রয়েছে। এই সংখ্যা শহুরে পরিবারগুলির জন্য ১৭% এবং গ্রামীণ পরিবারের জন্য ২৩%।
বাংলাদেশে শিশু শ্রম রোধে এখন পযর্ন্ত কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মূলত যতদিন পযর্ন্ত দারিদ্রতা দূর হবে না ঠিক ততদিন পযর্ন্ত শিশু শ্রম ও রোধ করা যাবে না।